সালেহ্ বিপ্লব: [২] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অগ্নি সন্ত্রাসের মতো মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলা করেও আমরা উন্নয়নের পথে দেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে চাই। সূত্র: বাসস

[৩] রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নবনির্মিত ১৫ তলাবিশিষ্ট ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন’ (বিটিআরসি) ভবন ও ১৩ তলা বিশিষ্ট ‘তথ্য কমিশন ভবন’ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে একইসঙ্গে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন’ (বিএফডিসি) কমপ্লেক্সেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

[৪] প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ আমাদের বার বার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন বলেই এই কাজগুলো আমরা করতে পেরেছি। বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে আজকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সরকার চলছে, দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। যদিও এর মাঝে আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ এবং অগ্নিসন্ত্রাস-এমন অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হয়েছে। কিন্তু তারপরেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে সেটাই আমরা চাই।

[৫] প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে এই বাংলাদেশকে আমরা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেখানে আমাদের স্মার্ট জনগোষ্ঠী হবে, স্মার্ট ইকোনমি হবে, স্মার্ট সোসাইটি হবে, স্মার্ট গভর্ণমেন্ট তথা প্রতিটি ক্ষেত্রই স্মার্ট হবে।

[৬] সরকারের চালু করা সর্বজনীন পেনশন স্কিমের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আগে অবসর ভাতা কেবল সরকারি কর্মকর্তারাই পেত, সেটাকে আমরা এখন সর্বজনীন করে দিয়েছি। কেননা যখন তাদের কাজ করার সুযোগ থাকবে না তখন তাদের জীবনটা যেন অর্থবহ থাকে এবং প্রত্যেক মানুষের জীবনটা যেন নিরাপদ হয়।

[৭] তিনি বলেন, আমরা যখনই কোনো উন্নয়নের উদ্যোগ নিই, তখনই দেখতে পাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ভিত্তি প্রদান করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ভিত্তির ওপর নির্ভর করেই আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

[৮] তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতে তার সরকারের প্রচেষ্টার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তথ্য চাওয়া এবং তথ্য পাওয়া মানুষের অধিকার। সেই অধিকার আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি এবং এখন মানুষ কোন তথ্য চাইলে তা পেতে পারে।

[৯] তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করে। আওয়ামী লীগের কোন রাখঢাক কিছু নেই। কোন তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে সেই চিন্তা আমাদের নেই। আমরা যা করবো সম্পূর্ণ ভাবে জনগণকে জানিয়ে জনগণের সাথে সম্পৃক্ত থেকেই করবো। জনগণের কল্যাণ করাটাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

[১০] প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ১৯৫৬ সালে মন্ত্রী থাকাকালীন জাতির পিতার হাতেই এদেশে চলচ্চিত্র শিল্পের গোড়াপত্তন হয়েছে। বঙ্গমাতারও এতে ভূমিকা ছিল। সে সময় এদেশে কোলকাতাভিত্তিক বাংলা ছবির প্রদর্শনী হোত। একটি ছায়াছবি দেখে রিকশাযোগে ফেরার পথে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুর কাছে কথা তুলেছিলেন, বাংলাদেশেও কি এমন চলচ্চিত্র নির্মাণ করা যায় না? পরবর্তীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ১৯৫৭ সালের ৩রা এপ্রিল তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদে এক বিল উত্থাপনের মাধ্যমে এফডিসি প্রতিষ্ঠা করেন। জাতির পিতা গাজীপুরে ফিল্মসিটির জন্য জায়গাও বরাদ্দ দিয়ে গিয়েছিলেন।

[১১] অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। সম্পাদনা: শামসুল হক বসুনিয়া